কেরানীগঞ্জে ভাতার টাকায় ডিজিটাল প্রতারণা

ঢাকার কেরানীগঞ্জে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের ভাতার টাকা আত্মসাৎ করছে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। মোবাইল হ্যাক করে নগদ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে তারা। এতে করে প্রকৃত ভাতাভোগীরা তাদের প্রাপ্য টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, আর প্রতিদিনই সমাজসেবা অফিসে এসে অসহায়ভাবে ফিরছেন খালি হাতে।

অনেকেই জানিয়েছেন, ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সময় ধরে তারা কোনো ভাতা পাচ্ছেন না। আগে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পেলেও, এখন ডিজিটালাইজেশনের পর থেকে টাকা যাওয়ার কথা নগদ অ্যাকাউন্টে। কিন্তু অনেকের মোবাইলে মেসেজই আসে না, আবার কারও কারও অ্যাকাউন্ট থেকে অজানাভাবে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে।

প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী আছিয়ার মা পারুল বলেন, “আমার মেয়ের ভাতার টাকা মোবাইলে আসে না। অফিসে গেলে বলে টাকা গেছে, কিন্তু আমি পাই না। আমি গরিব মানুষ, এই টাকায় সংসার চলে।”

বয়স্ক ভাতাভোগী মো. আমির আলী বলেন, “এক বছর ধরে ভাতার কার্ড পেয়েছি, কিন্তু মাত্র একবার টাকা তুলতে পেরেছি। বারবার দোকানে গেলেও বলে টাকা আসেনি। এভাবে ঘুরতে ঘুরতে এখন আর যাই না।”

সমাজসেবা অফিস বলছে, প্রতারক চক্র সমাজসেবা অফিসের নাম ব্যবহার করে ভাতাভোগীদের ফোনে কল দেয়, অতিরিক্ত টাকা দেওয়ার প্রলোভনে নিয়ে ওটিপি সংগ্রহ করে টাকা তুলে নেয়।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শিবলীজ্জামান বলেন, “আমরা মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে দিচ্ছি, যাতে প্রতারকরা আর টাকা তুলতে না পারে। কেউ যেন ওটিপি বা পিন কার্ডে ফোন করে দিলে না জানায়—সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করছি।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিনাত ফৌজিয়া বলেন, “এটি খুবই দুঃখজনক। সমাজসেবা কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে দোষীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ভাতাভোগীদের প্রতি অনুরোধ—কেউ যদি সমাজসেবা অফিসের নাম ব্যবহার করে ফোনে ওটিপি চায়, তা যেন কোনোভাবেই দেওয়া না হয়। কোনো সন্দেহ হলে সরাসরি অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

🛑 সতর্কতা: সমাজসেবা অফিস বা সরকারি কোনো সংস্থা কখনো ফোনে ওটিপি বা পিন কোড চায় না। অচেনা নম্বর থেকে এমন ফোন এলে তাৎক্ষণিকভাবে কেটে দিন এবং সংশ্লিষ্ট অফিসে জানান।

ইস্পাহানী ইমরান কেরানীগঞ্জ

Share With Your Friends

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *