রিটকারী ছাত্রীকে ‘গণধর্ষণে’র হুমকিদাতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি

ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টে রিট করা একজন নারী শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মধুর ক্যানটিনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের সদস্যরা। ডাকসু নির্বাচন ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ১৩টি দাবি জানিয়েছে প্ল্যাটফর্মটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তাহমিনা আক্তার ও মোশাহিদা সুলতানা। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘হাইকোর্টে একজন প্রার্থীর রিটের বিষয়কে কেন্দ্র করে, সেই নারী প্রার্থীকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষার্থী ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে গণধর্ষণের হুমকি দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। হুমকিদাতা আলী হুসেনকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।’

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘কোন বিধি লঙ্ঘনের জন্য নির্ধারিত শাস্তি কী, তা কোথাও উল্লেখ না থাকায় ঢালাওভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত তথ্য জানানো হলেও কমিশন যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ডাকসু নির্বাচনের জন্য মোট ভোটারের অনুপাতে যথেষ্টসংখ্যক বুথ নিশ্চিত করা; ভোটদানের সময়সীমা বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বর্ধিত করা; ভোট গণনার প্রক্রিয়াকে কার্যকর ও স্বচ্ছ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করা; নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি হিসেবে আচরণবিধি ও এর লঙ্ঘনসংক্রান্ত সব কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্রহণ করা ও সেগুলো যেন কোনো পক্ষের প্রতি বৈষম্যমূলক না হয়, তা নিশ্চিত করা; নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় দায়িত্ব পালনের জন্য শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিযুক্ত করার ক্ষেত্রে যেন কোনো বৈষম্য না হয়, তা নিশ্চিত করা, সাইবার বুলিং বন্ধ করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া, বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সম্পর্কে অরুচিকর পোস্ট ও মন্তব্যসহকারে আক্রমণ করা হয়—এমন গ্রুপ বা পেজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোটদানের উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে নিরাপদে আগমন নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন অনুসারে বাস ও ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানো; সংবাদমাধ্যমকর্মী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সংবাদ সংগ্রাহকদের আচরণবিধি মেনে চলার ব্যবস্থা নেওয়া; যৌন হয়রানিবিষয়ক যেকোনো ঘটনা সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক জানায়, যেভাবে ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচন তারা পর্যবেক্ষণ করেছিল, একইভাবে আসন্ন নির্বাচনেও তারা স্বতন্ত্র ও স্বাধীনভাবে পর্যবেক্ষকের ভূমিকা পালন করবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান প্রমুখ।

Share With Your Friends

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *