ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় প্রধানমন্ত্রী, সারায়েল কুদসের মুখ্যপাত্রসহ প্রায় ৫০০ জন মুসলমান শাহাদাত বরণ করেছেন। প্রতিদিন বোমার আঘাতে গুঁড়িয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, মাটিতে মিশে যাচ্ছে হাসপাতাল, ধ্বংস হচ্ছে মসজিদ-মাদ্রাসা। নিষ্পাপ শিশুদের লাশ সারি সারি পড়ে থাকছে ধ্বংসস্তূপের নিচে। আল্লাহ তায়ালা তাঁদের শাহাদাত কবুল করুন, জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন এবং ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মুসলমানদের রক্ষা করুন।
এদিকে ভারতেও মুসলমানদের ওপর নিপীড়ন ও সহিংসতা চলছে। নাগপুরে হিন্দু-মুসলমান সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে, প্রশাসন কারফিউ জারি করতে বাধ্য হয়েছে। মুসলমানদের ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়েছে, ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, পরিকল্পিতভাবে তাদের টার্গেট করা হচ্ছে। শুধু নাগপুর নয়, পুরো ভারতজুড়ে মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, মসজিদে হামলা করা হচ্ছে, মুসলিম নারীদের ওপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে।
কিন্তু বিশ্ব মুসলিম এখনও কেন নীরব? কেন এই হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়াচ্ছে না? ফিলিস্তিনে গণহত্যা চলছে, ভারতে মুসলমানরা নিপীড়নের শিকার—তবুও মুসলিম বিশ্বের নেতারা চুপ! তারা কি শুধু বিবৃতির মধ্যেই তাদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ রাখবেন? ইতিহাস কি তাদের কাপুরুষ বলে চিহ্নিত করবে না?
মুসলমানদের রক্ষার জন্য এখনই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। শুধু শোক প্রকাশ করে, বিবৃতি দিয়ে, উদ্বেগ জানিয়ে দায়িত্ব শেষ হলে চলবে না। এই নীরবতার খেসারত একদিন আমাদের সবাইকে দিতে হবে! সময় এসেছে জেগে ওঠার, বিশ্বকে জানিয়ে দেওয়ার—আমরা আর নির্যাতিত হতে রাজি নই!
এই ঘুম ভাঙবে কবে? কত শিশু গুলিতে ঝাঁজরা হলে আমরা জাগব? কত মা-বোন ইজ্জত হারালে আমরা সোচ্চার হব? কত মসজিদ-মাদ্রাসা ধ্বংস হলে আমরা রুখে দাঁড়াব?
পশ্চিমা বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো পরিকল্পিতভাবে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা মুসলমানদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি করছে, দেশকে দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলছে, ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, মুসলিম বিশ্বের অনেক শাসকই তাদের পদলেহন করছে, ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে ভয় পাচ্ছে। তারা পশ্চিমাদের সন্তুষ্ট রাখতে নিজেদের ঈমান বিক্রি করছে!
তাহলে কি মুসলমানরা চিরকালই লাঞ্ছিত-নিপীড়িত থাকবে? না! আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দ্বিধা, সংকোচ ভুলে ইসলামের পক্ষে, নির্যাতিত মুসলমানদের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিতে হবে।
আল্লাহর জমিনে অন্যায়ের বিরুদ্ধে জিহাদ ফরজ! এই জিহাদ কেবল অস্ত্রের নয়, বরং চেতনার, প্রতিরোধের, ঐক্যের। আমাদের নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে, মুসলিম দেশগুলোর শক্তিকে একত্রিত করতে হবে। একতা ছাড়া আমাদের মুক্তি নেই!
মোহাম্মদ মোহছেন মোবারক
আনোয়ারা,চট্টগ্রাম