যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে দুনিয়াকে ১৫০ বার ধ্বংস করা সম্ভব: ট্রাম্প

চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের অবসানের আহ্বান জানানোর কয়েক দিন পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, ওয়াশিংটনও বেইজিংয়ের জন্য একটি ‘হুমকি’।

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন ‘সব সময় আমাদের নজরে রাখে’ এবং একই সঙ্গে তিনি মার্কিন পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে বড়াই করে বলেছেন, তার দেশের কাছে থাকা অস্ত্র দিয়ে ‘দুনিয়াকে ১৫০ বার ধ্বংস করা সম্ভব’। 

ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অভিযোগ করছে, চীন যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থার কিছু অংশে অনুপ্রবেশ করেছে এবং মার্কিন মেধাস্বত্ব ও নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করছে।

সিবিএস নিউজের উপস্থাপকের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরাও তাদের জন্য হুমকি। তুমি যে বিষয়গুলো বলছ, আমরা সেগুলোর অনেকটাই তাদের সঙ্গে করি। এটা খুব প্রতিযোগিতামূলক এক বিশ্ব—বিশেষ করে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেমন তাদের দিকে নজর রাখি, তারাও আমাদের দিকে রাখে। তবে আমি মনে করি, আমরা এখন বেশ ভালোভাবে চলছি। আমি বিশ্বাস করি, আমরা একসঙ্গে কাজ করলে আরও বড়, ভালো ও শক্তিশালী হতে পারব; শুধু তাদের পরাস্ত করার চেষ্টা করলেই হবে না।’ 

সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প চীন দ্রুতগতিতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের কাছে বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। রাশিয়া দ্বিতীয় স্থানে। চীন অনেক পিছিয়ে, তবে পাঁচ বছরের মধ্যে তারা সমান অবস্থায় পৌঁছে যাবে। তারা দ্রুতগতিতে তৈরি করছে, আর আমি মনে করি, আমাদের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কিছু করা উচিত।’ ট্রাম্প জানান, তিনি পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়টি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন। 

তিনি বলেন, ‘পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের কাছে এমন অস্ত্র আছে, যা দিয়ে পৃথিবীকে ১৫০ বার ধ্বংস করা সম্ভব। রাশিয়ারও অনেক পারমাণবিক অস্ত্র আছে, আর চীনেরও কিছু আছে—বরং অনেকটাই আছে।’ নিজের দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশের পক্ষে সাফাই দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘চীন ও রাশিয়াও তাদের অস্ত্র পরীক্ষা করছে, শুধু তোমরা সেটা জানো না।’

রিপাবলিকান এই নেতা দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিপরীতে ‘খুব ভালো করছে’, তবে স্বীকার করেন যে বেইজিংয়ের হাতে বিরল খনিজ সম্পদের এক ধরনের ‘ক্ষমতা’ আছে, যা ওয়াশিংটনের ওপর প্রভাব ফেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা চীনের বিরুদ্ধে খুব ভালো করছিলাম। হঠাৎ তারা বুঝলো, আমাদেরও প্রতিরোধ করতে হবে। তখন তারা তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করল। তাদের যে ক্ষমতা, সেটা হলো রেয়ার আর্থ বা বিরল খনিজ। তারা ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে এগুলো জমাচ্ছে এবং যত্ন করে সংরক্ষণ করছে।’ 

এই খনিজ পদার্থগুলো কম্পিউটার থেকে শুরু করে অস্ত্র তৈরির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত জরুরি। ট্রাম্প বলেন, ‘তারা এটা আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে, আর আমরা তাদের বিরুদ্ধে অন্য জিনিস ব্যবহার করেছি। যেমন বিমান যন্ত্রাংশ। এটা খুব বড় ব্যাপার। তাদের শত শত বোয়িং বিমান আছে। আমরা তাদের যন্ত্রাংশ দেওয়া বন্ধ করেছিলাম। আমরা দুই পক্ষই হয়তো একটু অযৌক্তিক আচরণ করেছিলাম, তবে শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অস্ত্র ছিল শুল্ক।’

Share With Your Friends

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *