থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে একটি হাসপাতালের সামনের সড়কের একটি অংশ দেবে গেছে। এতে সেখানে প্রায় ৫০ মিটার গভীর একটি বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে। এ ঘটনায় অবশ্য কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ব্যাংককের ভাজিরা হাসপাতালের সামনের সামসেন রোডে আজ বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ১৩ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে। গর্তটি আনুমানিক ৩০ মিটার চওড়া ও ৩০ মিটার লম্বা। এই সড়কটি ঠিক ভাজিরা হাসপাতাল ট্রেনস্টেশনের ওপরে তৈরি হয়েছে।
ব্যাংকের দুসিত এলাকার সংশ্লিষ্ট সরকারি কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে ভাজিরা ও সাংঘি মোড়ের মধ্যে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের বলেন, সুড়ঙ্গ এবং রাস্তাটি মেরামত করতে কমপক্ষে এক বছর লাগবে। সন্ধ্যায় নতুন মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে আলোচনা করা হবে।
ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে একটি বড় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। পাঁচতলা সামসেন পুলিশ স্টেশনের নিরাপত্তা নিয়েও বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই ধসের কারণে মেট্রোস্টেশনের কয়েকটি পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এলাকার মাটি এখনো সরছে এবং পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় এই হাসপাতালের বহির্বিভাগের পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে এবং কাছাকাছি ভবনগুলো থেকে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ রোগীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানা গেছে, হাসপাতালের ভবনগুলোর কোনো ক্ষতি হয়নি।
আশপাশের ভবনে বসবাসরত বাসিন্দাদেরও এলাকা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ধসের পর বিদ্যুতের দুটি খুঁটি এবং পুলিশের একটি গাড়ি গর্তে পড়ে গেছে। মেট্রোপলিটন ইলেকট্রিসিটি অথরিটির (এমইএ) কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে কাজ করছেন।
এমআরটি পার্পল লাইনের নির্মাণকাজের স্বার্থে এলাকাটি আগে থেকেই বন্ধ ছিল।
ধসের কারণ সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো কিছু জানায়। ব্যাংককের গভর্নর চাডচার্ট সিটিপান্ট এবং তার দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন।
পরে চাডচার্ট বলেন, ভাজিরা হাসপাতাল রেলওয়ে স্টেশনের ওপরে গর্তটি তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে সুড়ঙ্গ এবং স্টেশনের সংযোগস্থলে। সুড়ঙ্গে মাটি ঢুকে যাওয়ায় আশেপাশের কাঠামো ধসে পড়েছে। পানি সরবরাহের বড় একটি পাইপ ফেটে গেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং ঝুঁকি এড়াতে কর্তৃপক্ষ পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। অন্যান্য জরুরি ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে সুড়ঙ্গের ফাটল বন্ধ করা, আশেপাশের ভবনের নিরাপত্তা মূল্যায়ন করা, মাটির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা এবং যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা।
গভর্নর বলেন, আরেকটি বড় উদ্বেগ হলো বৃষ্টি। ভারী বৃষ্টি হলে গর্তের মধ্যে আরও মাটি ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটি দল গঠন করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় হাসপাতালটি দুই দিনের জন্য বহির্বিভাগের পরিষেবা স্থগিত করেছে। তবে ভর্তি রোগীদের পরিষেবা চালু রয়েছে। এই সময়ে বহির্বিভাগের রোগীরা ব্যাংকক মেট্রোপলিটন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অধীন পরিচালিত অন্যান্য হাসপাতালে যেতে পারবেন।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে প্রতিদিন দুপুর ১২টা এবং সন্ধ্যা ৬টায় বৈঠক করা হবে বলে জানানো হয়েছে।