ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। ভারতের সেনাবাহিনী বুধবার সকালে পাকিস্তানের মাটিতে “অপারেশন সিঁদুর” নামে মিসাইল হামলা চালিয়েছে। ভারতীয় সামরিক বাহিনীর দাবি, তারা পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের অন্তত নয়টি স্থানে সফলভাবে হামলা চালিয়েছে।
পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানিয়েছেন, ভারতের এই হামলায় মুজাফফরাবাদ, কোটলি (পাক-শাসিত কাশ্মীর) এবং পাঞ্জাব প্রদেশের বাহাওয়ালপুর শহর লক্ষ্যবস্তু ছিল। হামলাগুলো ভারতের অভ্যন্তর থেকে চালানো হয়েছে এবং পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন হয়নি বলেও তিনি দাবি করেন।
এই হামলার ফলে এখন পর্যন্ত অন্তত ২ জন নিহত ও ১২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পাকিস্তান বলেছে, এটি বেসামরিক এলাকায় চালানো একটি উদ্দেশ্যমূলক আক্রমণ এবং এর জন্য যথাযথ জবাব দেওয়া হবে।
ভারতের পক্ষ থেকে এক্স (সাবেক টুইটার)-এ একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে”, যা তাদের প্রতিশোধমূলক অভিযানের ইঙ্গিত দেয়।
জবাব দেবে পাকিস্তান
পাকিস্তান তার পছন্দের সময় এবং স্থানে এর জবাব দেবে। ভারতের মিসাইল হামলার পর পাকিস্তান বিমান বাহিনীর সব যুদ্ধবিমান এখন আকাশে টহলে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে, ভারত তার নিজস্ব আকাশসীমা থেকে হামলা চালিয়েছে। তবে পাকিস্তান জানিয়েছে, তারা এই হামলার প্রতিশোধ নেবে নিজস্ব সময় ও স্থানে—এখন নয়, কিন্তু নিশ্চিতভাবে। এক বিবৃতিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, “ভারতের ক্ষণস্থায়ী আনন্দ এক গভীর শোকে রূপ নেবে।” কাশ্মীর অঞ্চলে দু’পক্ষের মধ্যে তীব্র গোলাবিনিময় চলছে। পুরো উপমহাদেশে যুদ্ধাবস্থা ঘনিয়ে আসছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তপ্ত। আন্তর্জাতিক মহলের নজর এখন ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে।

এই সংঘাতের পেছনে রয়েছে ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পাহেলগামে সংঘটিত একটি মর্মান্তিক হামলা, যেখানে ২৬ জন পর্যটককে গুলি করে হত্যা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হামলাকারীরা হিন্দু নারী পর্যটকদের স্বামীদের আলাদা করে হত্যা করে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন অ-মুসলিম।
এই ঘটনার পরই ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “বিশ্বের শেষ প্রান্ত থেকেও দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হবে।”
তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের প্রস্তাব দেয়।
ইসলামাবাদ থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক কামাল হায়দার জানান, বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে পরিস্থিতি “অত্যন্ত সংকটজনক” এবং আন্তর্জাতিক মহল উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।
আমরা পরিস্থিতির পরবর্তী আপডেট আপনাদের জানিয়ে যাব।