নেপালে পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতেও আগুন, মন্ত্রীদের সরিয়ে নিচ্ছে সেনাবাহিনী

বিক্ষোভের মুখে আজ মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি। তাঁর পদত্যাগের ঘোষণার আগেই সকালে বিক্ষোভকারীরা ভক্তপুরের বালকোট এলাকায় অলির ব্যক্তিগত বাসভবনে আগুন ধরিয়ে দেন।

কর্মকর্তারা বলেন, বিক্ষোভকারীরা আজ ভোরে মিছিল করে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে রওনা হন। পথে পুলিশ তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা পিছু হটতে অস্বীকৃতি জানান এবং বাধা উপেক্ষা করে সামনে অগ্রসর হন। শেষ পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা তাঁর বাসভবন প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন এবং সেখানে দুটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন।

শুধু অলির বাড়িতে নয়, এদিন বিক্ষোভকারীরা ক্ষমতাসীন জোটের শরিক নেপালি কংগ্রেস পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ কয়েকজন মন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের বাড়িতে হামলা চালান। এ সময় কয়েকটি বাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে শুরু করলে সেনারা ভৈসেপাতিতে হেলিকপ্টারে করে মন্ত্রীদের তাঁদের বাসভবন থেকে সরিয়ে নিতে শুরু করেন।

বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিবাদে এবং সরকারের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানাতে গতকাল সোমবার নেপালের হাজার হাজার মানুষ রাজধানী কাঠমান্ডুসহ সারা দেশে সড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগই বয়সে তরুণ, যাঁদের জেন-জি প্রজন্ম বলা হয়।

গতকাল বিক্ষোভ দমনে কঠোর হয় সরকার, বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চলে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ১৯ জন নিহত হন। আহত হন আরও কয়েক শ বিক্ষোভকারী। এ অবস্থায় দেশের পরিস্থিতি দ্রুতই সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় রাজধানী কাঠমান্ডুসহ কয়েকটি জেলায় কারফিউ জারি করা হয়। তবে কারফিউ উপেক্ষা করেই আজ ভোরে রাজপথে নেমে আসতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। শেষ পর্যন্ত ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী অলি। এদিন আরও দুজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

Share With Your Friends

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *