হঠাৎ মিশরের আকাশে উড়ে গেল চীনের অত্যাধুনিক নজরদারী বিমান কেজে 500। কিছুক্ষণ পর ক্ষিপ্রতিতে ডানা মেললো মিশরের মিগ 29। উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে চীনের যুদ্ধবিমান দেখে আচমকা মনে হতে পারে হয়তো কোন নতুন যুদ্ধ লেগে গেছে। বিশেষ করে ইসরাইলের একেবারে নাকের ডগায় মিশরের আকাশে চীনের যুদ্ধবিমানের আগমন জন্ম দিয়েছে নতুন আলোচনার।
মিশর এবং চীনের যুদ্ধবিমানের মহরা যেন দুই দেশের কৌশলগত নতুন সমীকরণ। যা সূচনা করবে নতুন দিগন্তের। পাশাপাশি সামরিক শক্তিতে চীন যে অপ্রতিরুদ্ধ গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে তারই একটি প্রদর্শন এই মহরা।
কয়েক মাস ধরে চলে আসা ইসরাইল মিশর উত্তেজনার মধ্যে কি বার্তা দিচ্ছে চীন। মিশরের এই যৌথ মোহরা শনিবার সকালে মিশরের একটি বিমান ঘাটিতে প্রথমবারের মতো যৌথ মোহরা শুরু করে চীন ও মিশর। যার নাম দেয়া হয়েছে ইগলসফ সিভিলাইজেশন 202।
তাদের লক্ষ্য অংশগ্রহণকারী দেশ দুটির বাহিনীর মধ্যে কৌশল ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি করা। এই মহরায় চীনের বিমান বাহিনী জেটন-সি ফাইটারজেট, ওয়াইউট এরিয়াল ট্যাংকার এয়ারক্রাফট এবং কেজে 500 আর্লি ওয়ার্নিং এয়ারক্রাফট মোতায়ন করে । বিশ্লেষকরা বলছেন এই এয়ারক্রাফটগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে চীনের প্রধান হাতিয়ার গুলোর মধ্যে অন্যতম।
এই মহরার মাধ্যমে চীনের কেজে 500 আর্লি ওয়ার্নিং এয়ারক্রাফট প্রথমবারের মতো কোন আন্তর্জাতিক মহরায় অংশ নিল। অপরদিকে মিশরের বিমান বাহিনী মহরায় মিক 29 মোতায়ন করে । চীন মিশরের এই যৌথ মহরা মিশরের বৈদেশিক প্রতিরক্ষা নীতি পরিবর্তনের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। পাশাপাশি এটি বিশ্ববাজারে চীনের সামরিক প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান চাহিদারও প্রতিফলন।
ভিনদেশের আকাশে চীনের ফ্ল্যাগশিপ কে 500 এয়ারক্রাফটের সফল উডয়ন উন্নত এবং নির্ভরশীল সামরিক সরবরাহকারী হিসেবে চীনের বিজয়ী হিসেবেও দেখা হচ্ছে। এই মহরা চীন- মিশর প্রতিরক্ষা সম্পর্কে নতুন অধ্যায় সূচনার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী চীনের সামরিক অংশীদারা হওয়ার উচ্চকাঙ্ক্ষাকে আরো জোড়ালো করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন চীন মিশর মহরা মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরক্ষা খাতে পশ্চিমা ও রাশিয়ার প্রভাব কমার দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বব্যাপী সামরিক পরিধি বাড়াতে বিভিন্ন দেশের সাথে পৃথক পৃথক যৌথ মহরা করে আসছে চীন। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে প্রথম যৌথ প্রশিক্ষণ পারস্পরিক সহযোগিতা আস্থা এবং বন্ধুত্ব বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ।
অপরদিকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কায়রো তার কৌশলগত অংশীদারিত্বে বৈচিত্র এনেছে কেবল প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের জন্যই নয় বরং যৌথ প্রশিক্ষণ এবং সামরিক সক্ষমতা বিনিময়ে ক্রমেই চীনের দিকে ঝুকছে দেশটি।
উইং লুং ইউএফবি এবং নির্ভুল নির্দেশিত যুদ্ধাশ্রীরের মত সরঞ্জাম সরবরাহ করে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি খাতে চীন হয়ে উঠেছে মিশরের এক ভরসার নাম ।