আকাশে ধ্বংস হয়ে গেল এক বিশাল শক্তির প্রতীক।
ভয়ঙ্কর নিখুত ও আধুনিক প্রযুক্তির এক ড্রোন ’এম কিউ নাইন রিপার’।
যেটি কিনা একাই যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম। তারই এই দুর্দশা? এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়টি গুলি করে নামিয়ে আনলো ইয়েমেনি সেনারা ।
খুদাইদার আকাশে মার্কিন এম কিউ নাইন রিপার ড্রোনের পতন শুধু একটি সামরিক ঘটনা নয়, বরং এটি ছিল এটি বার্তা। ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে আমেরিকান ও ব্রিটিশ আগ্রাসনের জবাবে ইয়েমনি সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে এটি ছিল এক জোরালো প্রতিরোধ ।
বৃহস্পতিবার এক টেলিভিশন বিবৃতিতে ইয়েমেনি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারিস জানান, আল্লাহর সাহায্যে আমাদের প্রতিরক্ষা ইউনিট হুদায়দা প্রদেশের আকাশে মার্কিন এম কিউ নাইন রিপার ড্রোনকে গুলি করে নামাতে সক্ষম হয়েছে।
এটি ছিল একটি শত্রু ড্রোন, যা ইয়েমেনের আকাশ সীমা লঙ্ঘন করে হামলার মিশনে ছিল । এম কিউ নাইন রিপার ড্রোনটি একটি হান্টার কিলার ড্রোন। যেটি দীর্ঘ সময় ধরে উঁচু থেকে নজরদারী ও হামলার জন্য ব্যবহৃত হয়।
ইয়েমেনী বাহিনীর দাবি, তারা দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি একটি সারফেস টু এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেই এই ড্রোনটি ধ্বংস করেছে। এই হামলার মাত্র 72 ঘন্টা আগেই ইয়েমেনের মারি প্রদেশে একই ধরনের আরেকটি এম কিউ নাইন রিপায়ার ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছিল।

এ নিয়ে 7 অক্টোবর 2023 থেকে শুরু হওয়া প্রতিশ্রুত বিজয় ও পবিত্র জিহাদের মধ্যে ইয়েমেনি বাহিনী মোট 17 টি মার্কিন ড্রোন ধ্বংস করল বলে জানিয়েছে সানা ভিত্তিক সামরিক সূত্র।
ব্রিগেডিয়ার সারি আরো জানান যতক্ষণ না গাজা ইসরাইলের আগ্রসণ বন্ধ হচ্ছে এবং অবরোধ তুলে নেয়া হচ্ছে ততক্ষণ ইয়েমেনী বাহিনী প্রতিরোধ চালিয়ে যাবে। ইয়েমেনী সেনাদের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা দেয়া হয়েছে, দেশের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করা হলে তারা আরো তীব্রভাবে জবাব দেবে।
আর এই প্রতিরোধ শুধু নিজেদের নিরাপত্তার জন্য নয় বরং গাজার মানুষের পাশে দাঁড়ানো তাদের দায়িত্ব বলে তারা মনে করছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মাসে ইয়েমেনের দৃঢ় ও শক্তিশালী সামরিক অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে হুথি বাহিনীকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেয়ার হুমকিও দেন।
এর জবাবে ইয়েমেনের সেনারা একের পর এক প্রতিরোধমূলক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। যার মধ্যে ড্রোন ভূপাতিত করা অন্যতম। এই অভিযানের মাধ্যমে ইয়েমেন শুধু নিজের প্রতিরক্ষা করছে না বরং ফিলিস্তিনি জাতির জন্য এক প্রতীকে জবাব দিচ্ছে।
এদিকে হুথি বাহিনীর টার্গেটকৃত হামলায় ইসরাইলের এলাত বন্দর কার্যত স্থবীর হয়ে পড়েছে। যার কারণে অর্থনৈতিক দিক থেকে ইসরাইলও ক্ষতির মুখে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে আকাশে এখন আর শুধু যুদ্ধবিমান ওড়ে না, প্রতিরোধের বার্তা ভেসে বেড়ায় ড্রোনের ধ্বংসস্তুপে।
আর সেই প্রতিরোধে নেতৃত্ব দিচ্ছে ইয়েমেন। যারা এখন শুধু নিজেদের নয় ফিলিস্তিনিদের পক্ষেও লড়ছে।