যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে কতটুকু সত্যভাষণ দিলেন নেতানিয়াহু

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে কতটুকু সত্যভাষণ দিলেন নেতানিয়াহু

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের অধিবেশনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দেওয়া ভাষণ ছিল আক্রমণাত্মক মন্তব্যে ভরা। ভাষণে ছিল প্রায় দশম মাসে পদার্পণ করা গাজা যুদ্ধ নিয়ে নানা দাবিও।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর জবাবে ওই দিন থেকেই ফিলিস্তিনের গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। এ হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৯ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া, ধ্বংসস্তূপের নিচে হাজারো মানুষের মরদেহ চাপা পড়ে আছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ভাষণে এ যুদ্ধ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গ বারবারই টেনেছেন নেতানিয়াহু। যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে আদালতের কৌঁসুলিরা গত মে মাসে নেতানিয়াহু, তাঁর প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং হামাসের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

কংগ্রেসে নেতানিয়াহু তাঁর ভাষণে যেসব দাবি করছেন, সেগুলোর কয়েকটি এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যাচাই করে দেখেছে দ্য গার্ডিয়ান। নিচে সেগুলো উল্লেখ করা হলো:

গাজাবাসীর জন্য খাদ্য সহায়তা

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কৌঁসুলি লজ্জাজনকভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজার বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে না খাইয়ে রাখার অভিযোগ করেছেন। এটা নিরেট ও ডাহা মিথ্যা। এটা পুরোপুরি বানোয়াট কথা। ইসরায়েল গাজায় ত্রাণবাহী ৪০ হাজার ট্রাক ঢুকতে দিয়েছে। এসব ট্রাকে ছিল অর্ধমিলিয়ন (৫ লাখ) টন খাদ্যসামগ্রী।

গাজায় আন্তর্জাতিক ত্রাণ তৎপরতা চালানোর পথ সুগম করতে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ শুধু ব্যর্থই হয়নি; বরং সক্রিয়ভাবে বাধা দিয়েছে।
—স্যালি আবি খলিল, অক্সফামের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকাবিষয়ক পরিচালক

তবে জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর গাজায় ত্রাণবাহী ২৮ হাজার ১৮টি ট্রাক প্রবেশ করেছে। যেসব পথ দিয়ে গাজায় এসব ট্রাক ঢুকেছে সেসবের মধ্যে রাফা ক্রসিং ছিল না। মে মাসের শুরুতে ইসরায়েলি বাহিনী এ ক্রসিংয়ের দখল নেয়। এতে উপত্যকাটির দক্ষিণাঞ্চলে ত্রাণ সরবরাহে ব্যাপকভাবে বিঘ্ন ঘটে।

ওই সময়ের পর থেকে মাত্র ২ হাজার ৮৩৫টি ট্রাক কেরেম শ্যালম ক্রসিং দিয়ে গাজার দক্ষিণে ও উত্তরের ইরেজ এলাকায় প্রবেশ করে। এতে প্রয়োজনের তুলনায় সরবরাহ করা গেছে অতি সামান্য ত্রাণ।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে ত্রাণসামগ্রী প্রবেশে বাধা দেওয়া ও ত্রাণ সরবরাহের ক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ আরোপের অভিযোগ করেছে ত্রাণ সংগঠনগুলো।

অক্সফামের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকাবিষয়ক পরিচালক স্যালি আবি খলিল গত মার্চে বলেছেন, ‘গাজায় আন্তর্জাতিক ত্রাণ তৎপরতা চালানোর পথ সুগম করতে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ শুধু ব্যর্থই হয়নি; বরং সক্রিয়ভাবে বাধা দিয়েছে।’

Share With Your Friends

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *