মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র! দোহার আকাশে বিস্ফোরণ, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের গন্ধ?

২৩ জুন, ২০২৫ তারিখে কাতারের রাজধানী দোহা আকাশে হঠাৎ বিস্ফোরণ ও আলো ঝলকানির ঘটনা দেখা যায়, যা দ্রুতই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ইরান দাবি করেছে, তারা কাতারে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি আল উদেইদ এয়ার বেসে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এই হামলার মাধ্যমে তারা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় চালানো হামলার প্রতিশোধ নিয়েছে বলে জানিয়েছে তেহরান।

ইরানের আধাসরকারি সংবাদ সংস্থা তাসনিম জানায়, ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (IRGC) এই হামলা পরিচালনা করেছে এবং এর নাম দিয়েছে “অ্যানান্সিয়েশন অব ভিক্টোরি” (জয়ের ঘোষনা)। কাতারের আকাশে চোখ ধাঁধানো ফ্লেয়ার ছোঁড়া ও বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

কাতারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, দেশের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সময়মতো সক্রিয় হয়ে হামলাগুলো প্রতিহত করেছে। এতে কোনো প্রাণহানি কিংবা ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। মন্ত্রণালয় বলেছে, “সশস্ত্র বাহিনীর সতর্কতা ও পূর্ব প্রস্তুতি সফলভাবে এই আক্রমণ মোকাবিলা করেছে।”

তেহরান থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক আলি হাসেম বলেন, “এই হামলা ইরানের যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী পাল্টা জবাবের সূচনা হতে পারে। এখনও স্পষ্ট নয়, এটি এককালীন হামলা না পরবর্তীতে আরও কিছু ঘটবে।” তিনি আরও বলেন, “বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি একটি পূর্ব-নির্ধারিত বা পূর্ব-সতর্ক হামলাও হতে পারে। যেমন ২০২০ সালে কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার পর ইরান ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে পাল্টা হামলার সময় করেছিল।”

তিনি যোগ করেন, “অনেকেই বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র আগেই জানতো এই হামলা আসতে পারে, আবার ইরানও ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার খবর আগেভাগেই পেয়েছিল। কিন্তু এসব এখনো জল্পনা মাত্র।”

ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ জানিয়েছে, কাতারের আবাসিক এলাকা থেকে দূরে আল উদেইদ ঘাঁটির ওপর হামলা চালানো হয়েছে যাতে বেসামরিক মানুষের ক্ষয়ক্ষতি না হয়।

এই ঘটনার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার পারদ বাড়লো। যুক্তরাষ্ট্র এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি, তবে সামরিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই হামলার জবাবে হোয়াইট হাউসও শক্ত প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।

বিশ্বব্যাপী যুদ্ধের আশঙ্কার মধ্যে এই হামলা নতুন এক অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। প্রশ্ন উঠছে, এই হামলা কি একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের সূচনা নাকি কূটনৈতিক টানাপোড়েনের একটি নতুন রূপ? এখন নজর আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার দিকে।

Share With Your Friends

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *