ইয়েমেনের হামলায় অকার্যকর এখন মার্কিন রণতরী। স্যাটেলাইট ইমেজ সহ গোয়েন্দা বিভিন্ন সূত্র বলছে, লোহিত সাগরে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের দমনে আসা মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস ট্রু ম্যান এখন ভয়ঙ্কর বিপদে । অচলও হয়ে যেতে পারে এটি। এই খবর প্রকাশের পর হইচই পড়ে গেছে পশ্চিমা দুনিয়ায়।
যে রণবহর বিশ্বের সাগর মহাসাগর দাপিয়ে বেড়ায় , মার্কিন সেই শক্তি আর গর্বের প্রতীককে এক মাসের মধ্যেই পরাস্ত করায় ইয়েমেনের দলটির শক্তি নিয়ে এখন বিশ্বয় ছড়িয়ে পড়েছে। আর আতঙ্কে কাঁপছে ইসরাইল। প্রায় দুই বছর আগে ফিলিস্তিনে এক নিঃশ্বংস হামলা শুরু করে নেতা নিয়াহুর বাহিনী।
মুসলিম বিশ্ব দায় সাড়া নিন্দা জানালেও অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিরোধ দলগুলো। গাজায় আগ্রাসন শুরুর পর 2023 সালের নভেম্বর থেকেই লোহিত সাগরের নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দেয় ইয়েমেনের প্রতিরোধ যোদ্ধারা । তাদের হামলায় ইসরাইল ও এর মিত্রদের সাথে সংশ্লিষ্ট একের পর এক জাহাজ সমাধিস্ত হতে থাকে । সাগরের নিচে ইয়েমেনের দলটিকে দমনে সে সময়ই বাইডেন সরকার তার ইউরোপীয় মিত্রদের জাহাজ বহর পাঠায় লোহিত সাগরে ।
তবে ইয়েমেনের মিসাইল হামলায় কোন মতে পালিয়ে বাঁচে বাহিনীগুলো। গেল মাসে গাজায় ইসরাইলের হামলা শুরুর পর আরো ভয়ঙ্কর রূপে ফিরেছে ইয়েমেনের প্রতিরোধ যোদ্ধারা । ট্রাম্প জানান ইসরাইল ও লোহিত সাগরে হামলা বন্ধ না হলে ইয়েমেনের দলটিকে নিশ্চিহ্ন করে দেবেন তিনি। সেই লক্ষ্যে বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস ড্রোমেন সহ যুদ্ধজাহাজের এক বহর পাঠান লোহিত সাগরে ।
তবে এক মাসের ব্যবধানে এখন অকার্যকর হওয়ার পথে মার্কিন বাহিনীর এই গর্ব। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করেছিলেন ইয়েমেনের দলটিকে যেন হালকাভাবে না নেন ট্রাম্প । পার্বত্য অঞ্চলে মাটির কয়েক কিলোমিটার নিচে এমনভাবে তাদের অস্ত্র ভান্ডারগুলো তৈরি যা মাসের পর মাসেও শনাক্ত করতে পারেনি পশ্চিমাদের অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি ।
সেখান থেকেই মার্কিন রণতরীগুলোতে মিসাইল আর ড্রোনের অবিশ্বাস্য সব হামলা চালাচ্ছেন প্রতিরোধ যোদ্ধারা । যেগুলো চুরমার করে দিচ্ছে ড্রোন আর বিমানবাহী রণতরীর ক্ষমতা । এক মাস ধরে চালানো অব্যাহত হামলায় এখন অকেজো মার্কিন বহর ।
ক্ষেপণাস্ত্র, বিমান হামলায় বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ সামরিক শক্তির ইয়েমেনের দলটিকে ধ্বংস করা সম্ভব না বলে সতর্ক করেছিলেন মার্কিন বিশ্লেষকরা । তবে ট্রাম্প সেসবে পাত্তা না দেয়ায় এখন তার পরিণতি ভোগ করছে। যদিও রণতরীগুলোর ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে তেমন কোন মন্তব্য করছে না ট্রাম্প প্রশাসন।
উল্টো ট্রাম্প ও তার মন্ত্রীরা বলছেন ইয়েমেনের অস্ত্র ভান্ডার সহ সব সক্ষমতা নাকি ধ্বংস করা হয়েছে । তবে উল্টো এখন মার্কিন বহর আর বাহিনীর এমন দুর্দশায় সেটা যে কত বড় মিথ্যে সেই নিয়েই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বইছে সমালোচনার ছড়।
এমনকি এক মাসেই ইয়েমেনের হামলায় কয়েক বিলিয়ন ডলার ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ায় মার্কিন গণমাধ্যমগুলোই ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে।