ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বাহিনীর হামলা এবং গাজায় চলমান সংঘাতের প্রতিবাদে চবির বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ

ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বাহিনীর হামলা এবং গাজায় চলমান সংঘাতের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর নিষ্ঠুরতা ও নির্বিচারে হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবি তুলে ধরেছে।

বিক্ষোভ মিছিলটি বুধবার (১৯ মার্চ ২০২৫) সন্ধ্যা ৭টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে শুরু হয়ে জিরো পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন, যেমন: ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘বিশ্বের মুসলিম, এক হও এক হও’, ‘ফ্রম দ্যা রিভার টু দ্যা সি’, ‘প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘ফিলিস্তিনে হামলা কেন? জাতিসংঘ জবাব দে’, ‘ইসরাইল নিপাত যাক ফিলিস্তিন মুক্তি পাক’, ‘বিশ্বের মুসলিম এক হও লড়াই করো’, ‘গাজায় হামলা কেন? জবাব চাই জবাব চাই’ ইত্যাদি।

বিক্ষোভকারীরা ইসরাইলি বাহিনীর গাজায় চলমান হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, গাজায় শিশু, বৃদ্ধ ও সাংবাদিকসহ নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর হামলা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। তারা জাতিসংঘ ও বিশ্ব নেতাদের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করে বলেন, জাতিসংঘ ও পশ্চিমা বিশ্ব মুসলিমদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং ইসরাইলি আগ্রাসনকে সমর্থন করছে।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, ‘ইসরাইল আমাদের অসহায় ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্মম গণহত্যা চালিয়েছে। কোথায় আজ মানবাধিকারের বুলি আওড়ানো জাতিসংঘ? জাতিসংঘ করা হয়েছে পশ্চিমা আর ইহুদিদের দালালি করার জন্য। ওহে মুসলিম উম্মাহ, ওহে আরব লীগ, তোমরা ঐক্যবদ্ধ হও। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি আমাদের তেজস্ক্রিয়তায় তারা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের চবি সেক্রেটারি আবদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখনো নিজেদের মুসলিম জাতিসত্তায় রূপান্তরিত করতে পারিনি। আপনারা একেকজন সালাহউদ্দিন আইয়ুবী, তারেক বিন জিয়াদ হয়ে উঠুন। বিশ্ব মোড়লরা আজ কোথায়? পশ্চিমাবিশ্ব বরাবরই মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। মুসলিম নিধনই তাদের একমাত্র লক্ষ্য।’

চবি ছাত্রশিবিরের অফিস সম্পাদক হাবিবুল্লাহ খালেদ বলেন, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গণহত্যা গতকাল ইসরাইল ফিলিস্তিনে করেছে। এই হামলায় শিশু, বৃদ্ধা ও সাংবাদিক কেউ বাদ যায়নি। বর্তমানে ইসরাইল সারা বিশ্বের মধ্যে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র। আবার যদি ফিলিস্তিনে হামলা করা হয় ১৯০ কোটি মুসলিম মিলে আমরা তাদের প্রতিহত করবো। আমাদের মুসলিম জাতি থেকে আবার সালাউদ্দিন আইয়ুবী আসবে যা ইসরাইলকে ধ্বংস করবে।’

চবি শিবিরের সেক্রেটারি মুহাম্মদ আলী বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যেই গতকাল আমাদের পূণ্যভূমি গাজা উপত্যকায় সন্ত্রাসী জায়োনিস্টরা নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। এই হামলায় মানবতার ধোঁয়া উড়ানো বিশ্ব মোড়লরা নিশ্চুপ। মসজিদুল আকসা এবং ফিলিস্তিনকে রক্ষা করার জন্য ওআইসি গঠন করা হয়েছিল, কিন্তু ওআইসি আজ নির্জীব। এই নির্জীব ওআইসি আমাদের প্রয়োজন নেই। আমাদের প্রয়োজন একজন সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর মতো সেনাপতি, যিনি আমাদের সাথে নিয়ে ফিলিস্তিনকে আবারো স্বাধীন করবেন।’

বিক্ষোভকারীরা বিশ্ব মুসলিম নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনাদের এই নিষ্ক্রিয়তা, অলসতা একদিন আপনাদের ঘাড়েও এসে বসবে। এখন হয়তো আপনারা বিনোদন করছেন, ক্ষমতায় টিকে আছেন। ফিলিস্তিনিদের ওপর পড়া প্রতিটি বোমা আপনাদের ওপরও পড়বে। তখন বুঝবেন এসব বোমার তেজস্ক্রিয়তা কত ভয়াবহ।’

এই বিক্ষোভ মিছিলে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা হয়েছে এবং ইসরাইলি বাহিনীর হামলার বিরুদ্ধে বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

Share With Your Friends

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *