চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক সময়ে তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে অশালীন, আক্রমণাত্মক ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের কারণে গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞপ্তি ও ফলাফল প্রকাশ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখন থেকে সকল প্রকার গুরুত্বপূর্ণ নোটিশ ও ঘোষণা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নোটিস বোর্ড এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। এই সিদ্ধান্তের পেছনে ফেসবুক পেজে শিক্ষার্থী ও অন্যান্য ব্যবহারকারীদের অশালীন মন্তব্যকে দায়ী করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের মন্তব্য:
এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেক শিক্ষার্থী এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন, আবার অনেকে এটিকে যৌক্তিক বলে মনে করেছেন। নিচে শিক্ষার্থীদের কিছু উল্লেখযোগ্য মন্তব্য উপস্থাপন করা হলো:
অনেক শিক্ষার্থী ফেসবুক পেজে গুরুত্বপূর্ণ আপডেট চালু রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন, তবে কমেন্ট অপশন বন্ধ রাখার অনুরোধ করেছেন। তাদের মতে, ফেসবুক পেজে আপডেট পাওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধাজনক। কমেন্ট অপশন বন্ধ রাখলে অশালীন মন্তব্য থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
কিছু শিক্ষার্থী বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত যৌক্তিক সমালোচনা গ্রহণ করা। তারা মনে করেন, প্রশাসন যদি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অশালীন মন্তব্য করার কোনো কারণ থাকবে না। প্রশাসনকে সমালোচনা গ্রহণের মানসিকতা রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অনেক শিক্ষার্থী ফেসবুক পেজের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তাদের মতে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক পেজ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনুকরণীয় ছিল। এই পেজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সহজেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতেন। এই সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ায় তারা হতাশা প্রকাশ করেছেন।
কিছু শিক্ষার্থী অশালীন মন্তব্যকারীদের সমালোচনা করেছেন। তারা বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের এমন আচরণ করা উচিত নয়। তাদের মতে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার করে কিছু শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুণ্ন করছে।
অনেক শিক্ষার্থী কমেন্ট সেকশন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের মতে, গুরুত্বপূর্ণ পোস্টে কমেন্ট অপশন বন্ধ রাখা যেতে পারে। আবার কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কমেন্ট সেকশন সীমিত করা যেতে পারে।
অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ফেসবুক পেজের ভূমিকা পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেছেন। তারা বলেছেন, ফেসবুক পেজের মাধ্যমে তথ্য প্রদান বন্ধ করে দেওয়া কোনো সমাধান নয়। বরং অশালীন মন্তব্যের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
কিছু শিক্ষার্থী বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সচেতনতা বাড়ানো উচিত। তাদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের উচিত সভ্য ও রুচিশীল আচরণ করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুণ্ন করা উচিত নয়।
কিছু শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট উন্নয়নের পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের মতে, ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ আপডেট দেওয়া যেতে পারে। তবে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে তথ্য প্রদান চালু রাখার অনুরোধও করেছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক পেজে অশালীন মন্তব্যের কারণে গুরুত্বপূর্ণ আপডেট বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন এবং ফেসবুক পেজের মাধ্যমে তথ্য প্রদান চালু রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। আবার কিছু শিক্ষার্থী অশালীন মন্তব্যকারীদের সমালোচনা করেছেন এবং কমেন্ট সেকশন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ, তারা যেন এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে এবং শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে সঠিক সিদ্ধান্ত নেন।