গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ে যে ৪ শর্ত দিল ইসরাইল

আর কয়েকদিনের মধ্যেই গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হওয়ার কথা। তবে দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রবেশের জন্য ৪টি শর্ত রেখেছে ইসরাইল। যদি এই চার শর্ত পূরণ না হয়, সেক্ষেত্রে চুক্তির প্রস্তাবিত দ্বিতীয় পর্যায় শুরুর ব্যাপারটি পুরোপুরি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে বলে জানিয়েছেন দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী এবং যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এলি কোহেন।

মঙ্গলবার ইসরাইলি টিভি চ্যানেল কান-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে কোহেন বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের ৪টি শর্ত রয়েছে— ক) ৭ অক্টোবর এবং তার আগে যেসব ইসরাইলিকে গাজায় বন্দি করা হয়েছিল— তাদের সবাইকে মুক্তি দিতে হবে, খ) গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসকে গাজা থেকে বিদায় নিতে হবে, গ) গাজা উপত্যকাকে অবশ্যই সম্পূর্ণ অস্ত্রমুক্ত করতে হবে এবং ঘ) পুরো গাজা এলাকায় ইসরাইলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণ থাকবে। ’

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস।  এতে অন্তত ১২০০ জন নিহত হন আর ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা।  হামাসের এই হামলার জবাবে গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরাইল।  দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে চলা এই অভিযানে ৪৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হন।  

অবশেষে সেই যুদ্ধের বিরতি হয় চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি।  গাজায় সংঘাত থামাতে ২০২৪ সালের ২৩ জুন একটি তিন স্তরের যুদ্ধবিরতি চুক্তি প্রস্তাব করেছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। 

এই চুক্তির প্রথম পর্বের মেয়াদ ছিল ৬ সপ্তাহ। এ পর্বে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস, যেসব জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে এই পর্বে, তাদের মধ্যে বয়স্ক এবং নারীরা প্রাধান্য পাবেন।

এর বিনিময়ে গাজার জনবসতিপূর্ণ সব এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে ইসরাইল, কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শতাধিককে মুক্তি দেবে এবং এ ছয় সপ্তাহের প্রতিদিন গাজায় প্রবেশ করবে ত্রাণ পণ্যবাহী ৬০০টি ট্রাক।

দ্বিতীয় পর্যায়ে স্থায়ীভাবে সংঘাত শেষ হবে গাজায়। চুক্তির শর্ত অনুসারে, এ পর্যায়ে অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস এবং বিনিময়ে বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ১ হাজার জনকে মুক্তি দেবে ইসরাইল এবং উপত্যকা থেকে ইসরাইলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।

আর তৃতীয় পর্যায়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকাকে পুনর্গঠনের কাজ শুরু হবে।

তবে চুক্তিতে এ-ও উল্লেখ ছিল যে যতদিন দ্বিতীয় পর্যায় শুরু না হয়, ততদিন প্রথম পর্যায় অব্যাহত থাকবে।

Share With Your Friends

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *