গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় মঙ্গলবার সকাল থেকে অন্তত ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ক্ষুধার্ত খাদ্যপ্রার্থীরা, চিকিৎসক এবং শরণার্থী তাবুতে অবস্থানরত সাধারণ মানুষ।
গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানায়, নেটজারিম করিডোরের কাছে বিতর্কিত মার্কিন-চালিত সাহায্যকেন্দ্রের সামনে খাদ্যের জন্য জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়ে অন্তত ২০ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। নিহতদের মধ্যে রয়েছে ১২ বছর বয়সী শিশু মোহাম্মদ খলিল আল-আথমনেহ। এই হামলায় আহত হয়েছে আরও ২০০ জনের বেশি।
বিতরণ কেন্দ্রগুলো পরিচালনা করছে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF), যা ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে গঠিত একটি উদ্যোগ। তবে এই কেন্দ্রগুলোকে স্থানীয়রা “মানব হত্যাকেন্দ্র” হিসেবে অভিহিত করছেন। ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত এসব কেন্দ্রে ১৫০ জনের বেশি নিহত ও প্রায় ১,৫০০ জন আহত হয়েছেন।
গাজা মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, “GHF এখন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে একটি মারাত্মক অস্ত্র হয়ে উঠেছে, যারা ক্ষুধার্ত মানুষকে সহায়তার ছলে মৃত্যুর ফাঁদে ফেলছে।”
আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজ্জুম জানান, “এই বিতরণ কেন্দ্রগুলো এখন বেসামরিকদের ওপর বারবার রক্তপাতের মঞ্চে পরিণত হয়েছে।” তিনি বলেন, ইসরায়েলি ড্রোন, ট্যাংক ও স্নাইপার দিয়ে এসব কেন্দ্র ঘিরে ফেলা হয়েছে এবং বিভিন্ন দিক থেকে হামলা চালানো হচ্ছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা UNRWA জানায়, গাজায় মানবিক সংকট নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে। সংস্থাটির তথ্যমতে, মে মাসের শেষ দিকে পাঁচ বছরের নিচে ২,৭০০ শিশুর তীব্র অপুষ্টি ধরা পড়েছে।
ইসরায়েল গত ২ মার্চ থেকে কার্যত পুরো গাজায় ত্রাণ অবরোধ বজায় রেখেছে। শুধুমাত্র GHF-এর মাধ্যমে সীমিত সাহায্য প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে, যেখানে অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।