একপক্ষ লালখান বাজারে, অন্যপক্ষ বিপ্লব উদ্যানেবৈষম্যবিরোধীরা দুভাগ, নগরে আলাদা কর্মসূচি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণের কমিটি ঘোষণার জের ধরে এবার সমন্বয়কদের বিরোধ গড়িয়েছে সড়কে। একপক্ষ সংবাদ সম্মেলনের পর সড়ক অবরোধে বসেছে। আরেক পক্ষ দুই নম্বর গেট বিপ্লব উদ্যানে জড়ো হয়েছে। সেখান থেকে গণপদযাত্রা কর্মসূচি রয়েছে তাদের।

কমিটি বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ। নগরের ব্যস্ততম লালখান বাজার মোড়ে সড়ক অবরোধ করায় সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন স্কুল-কলেজ ফেরত শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য যাত্রীরা। পুলিশ, ডাইভারশেন দিয়ে যানবাহন চলাচল অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছে। এদিকে কমিটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত সড়ক না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টা থেকে নগরের লালখান বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ শুরু করেন তারা। এর আগে, বেলা ১২টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের একাংশ সংবাদ সম্মেলনে করেন। সেখানে তারা জানিয়েছিলেন, তাদের তিন দফা দাবি মানতে হবে। এরমধ্যে প্রথম দাবি নতুন কমিটি বাতিল করা। আর সেটি বাতিলের জন্য তিনটা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেন, আমরা ডাইভারশন দিয়ে সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি। অররোধকারীদের সাথে কথা বলেছি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তারা জানিয়েছে কেন্দ্রের সাথে কথা বলার পর তারা সড়ক ছাড়বে।

এর আগে, মঙ্গলবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম নগর, উত্তর এবং দক্ষিণের কমিটিতে ‘একপাক্ষিক’ বলে মন্তব্য করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়করা। তাদের দাবি— ২৪’র স্পিরিটের সঙ্গে বেঈমানি করা হয়েছে। পাশাপাশি কমিটিতে ব্যবসায়ী, নারী হেনস্তায় অভিযুক্ত এবং কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের স্থান দেওয়া হয়েছে। তাই এ কমিটি অবাঞ্চিত ঘোষণার পাশাপাশি পদত্যাগ করার কথাও জানান তারা। কতজন পদত্যাগ করেছেন সেটি নির্দিষ্ট করে জানাননি তারা। তবে তারা জানিয়েছেন, অন্তত ৫০ থেকে ১০০ জন কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন। 

সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়করা। এ সময় তিন দফা দাবি জানান তারা। তাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে অবরোধ কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। পাশাপাশি এসব দাবি সময়ের মধ্যে না মানলে তার পরিপ্রেক্ষিতে যা কিছুই হবে সেসবের ‘দায়ভার’ হাসনাত আব্দুল্লাহকে নিতে হবে। একইসঙ্গে রাফিকেও এর দায় নিতে হবে।

তিন দফা দাবিগুলো হলো :

► বিকেল ৩টার মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রাম নগর, উত্তর এবং দক্ষিণের কমিটি বাতিল করতে হবে। মূল আন্দোলনকারীদের নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন করতে হবে। 

► আগামী তিনদিনের মধ্যে কমিটি গঠনের আগে অভিযুক্ত সকল ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

► ব্যক্তির পছন্দে গঠিত কমিটিসমূহ গঠনের সঙ্গে জড়িত সকলের নাম-পরিচয় প্রকাশ করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

Share With Your Friends

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *